সফল জীবনের জন্যই ক্যারিয়ার

Career
স্টাফ রিপোর্টারঃ ক্যারিয়ার নামক লম্বা একটা জার্নি শুরু করার আগে যেনে নেওয়া যাক ক্যারিয়ারটা আসলে কি? সফলতার জন্য এর ভুমিকাটাই বা কতখানি! ক্যারিয়ারঃ শব্দটির আভিধানিক অর্থ- “জীবনের পথে অগ্রগতি, জীবনায়ন, জীবিকা নির্বাহের উপায় বা বৃত্তি।”
.
Cambridge International Dictionary of English এর সংজ্ঞা অনুযায়ী: “শিক্ষা বা প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে অর্জিত এমন এক কর্ম যেখানে ব্যক্তির সমগ্র কর্ম জীবনে গুনগত এবং অভিজ্ঞতা সম্পর্কিত উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি আসে, দায়িত্বে ব্যাপকতা বৃদ্ধি পায় এবং জীবন যাপনে পর্যাপ্ত অর্থের নিশ্চয়তা থাকে।” অর্থাৎ জীবিকার পথ হিসেবে মানুষ যে পন্থা বেছে নেয় তাই মূলত তার ক্যারিয়ার। একটু বিস্তারিত বলতে গেলে জীবন বাঁচানোর জন্য প্রতিটি মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে এবং তার জন্য মানুষ কোন একটি কাজে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করে।

সেই কাজের দক্ষতাকে তার জীবিকার প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয়াটাই তার ক্যারিয়ার। যেমনঃ একজন ডাক্তার তার জীবিকা নির্বাহের জন্য ডাক্তারি করে থাকেন। এখানে ডাক্তারি করাটাকেই তিনি তার ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
.
ক্যারিয়ার এবং কাজ করা, পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হলেও একই বিষয় নয়। একটি উদাহরণ এর মাধ্যমে আরো একটু বিশ্লেষণ করা যাক যেমন: একজন ছাত্র যদি সাধারণ কোন একটা বিষয়ে ইসলামের ইতিহাস, সমাজ বিজ্ঞান বা অন্য কোন বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে এবং কিছুদিন পর একটা কোম্পানির রিপ্রেজেনটিভ বা মার্কেটিং অফিসার হিসেবে চাকুরি শুরু করে তখন সেটাকে তার ক্যারিয়ার বলা যাবেনা কারণ, কয়েক বছর চাকুরী করার পর সে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিজেকে একজন শিক্ষক হিসেবে তৈরি করে তার ক্যারিয়ার গড়তে পারে। তাই বলা যায়, কোন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের পর সেই বিষয়কে জীবিকার মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয়াটাই ক্যারিয়ার।
.
পরিকল্পনা অনুযায়ী শুরু হোক ক্যারিয়ারঃ
“জীবনের লক্ষ্য” (Aim in life) এই বিষয়ে ছাত্র জীবনে রচনা লেখেননি এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুষ্কর। বুঝে হোক বা না-বুঝে হোক সবাই কিছু না কিছু লিখেছে। হয়তো বাস্তব জীবনে অনেকে সেটা অর্জন করেছে অথবা লক্ষ্যে পৌছেছে। তবে, বর্তমান প্রতিযোগিতার বাজারে একটু ভেবে চিন্তে ক্যারিয়ার করাটা বুদ্ধিমানের কাজ। ছোট একটা সিদ্ধান্তই বলে দেতে পারে ভবিষ্যতে কে কোথায় দ্বাড়াবে।
একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং ক্যারিয়ার গ্রাফ অনুসরণ করেই জীবন যাপনের ধরা চিন্তা করা উচিত। এক্ষেত্রে” বাবা মা ” আদর্শ ও নীতিবান শিক্ষক বা ভালো একজন মেন্টর এর দায়িত্ব পালন করতে পারেন। মনে রাখতে হবে, ঘনঘন মত বদলানোটা বড্ড বোকামি, মনের মধ্যে বাড়তি কোন ইচ্ছে থাকলে সেটা সবার সামনে প্রকাশ করা উচিত। মনের মধ্যে উদ্ভাবক, উদ্দোক্তা হওয়ার স্বপ্ন পোষণ করে নৃত্য শিল্পী হয়ে ওঠাটা ক্যারিয়ারের জন্য হুমকি স্বরুপ। প্রয়োজনের সময় কথা না বলাটা এবং পরামর্শ বিহীন সিদ্ধান্ত গ্রহণ যে-কোন কাজের জন্যই নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
.
তাই ক্যারিয়ার নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছেশক্তি, ভালোলাগা, এমন বিশ্বাস থাকা যে, এটা থেকে আমি সফল হতে পারবোই, এমনকি নিজের অবস্থান, বৈশিষ্ট্য এবং পারিবারিক সামর্থ্যের কথাটাও কিছু ক্ষেত্রে মাথায় রাখা উচিত। মনের সব ইচ্ছে কখনো পূরণ হয়না। তাই বলে আপনি থেমে যাবেন তা কিন্তু নয়! যখন অনেক গুলো বিকল্প সামনে আসে তার মধ্যে নিজের ইচ্ছে শক্তি, কর্ম তৎপরতা, প্রচেষ্টা, সংগ্রাম সবকিছু মাথায় রেখে সঠিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একটি ক্যারিয়ার বেছে নিতে হবে।
.
ক্যারিয়ার নির্বাচনের আগে প্রতিটি পেশা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকাটাও জরুরি। সেটা স্বল্প পরিসরে হলেও।
সেক্ষেত্রে পেশা সম্পর্কে ধারণা ও তথ্য সংগ্রহের জন্য কিছু বিষয়ের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। যেমনঃ
★ সংশ্লিষ্ট পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের পরামর্শ।
★ ভালো মেন্টর বা ক্যারিয়র কাউন্সিলর এর পরামর্শ।
★ সংশ্লিষ্ট পেশার ক্ষেত্র সমূহ পরিদর্শন।
★ পেশা সম্পর্কিত বই পাঠন-পঠন
আবার ভালো নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমেও ক্যারিয়ার নির্বাচন অনেকটা সহজ হয়।
.
সফলতার জন্য ক্যারিয়ারঃ-
ছোট এই জীবনে সবাই সফল হতে চায়, কেউ শর্টকাটে কেউবা পরিশ্রম করে। সফলতার জন্য পরিশ্রম বাধ্যতামূলক সেটা যেই সেক্টরই হোকনা কেন। তবে, বর্তমান ১৭ কোটি মানুষের ছোট বাংলাদেশে কিছু ক্যারিয়ার সফলতা অর্জনে অনেক ভুমিকা রাখে। ক্যারিয়ার ভাবনার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্রেইনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ব্যাক্তিগত সফলতার সাথে সাথে মানব জাতির উন্নয়নে নিজেকে যুক্ত করা।
.
যেখানে শিক্ষা কিংবা প্রশিক্ষণ নেই সেখানে ক্যারিয়ার অনুপস্থিত। একারণে অশিক্ষিত একজন কৃষক এবং শিক্ষিত একজন কৃষিবিদ যখন কৃষিকে জীবিকা অর্জনের ক্ষেত্র হিসেবে অবলম্বন করেন তখন কৃষকের জন্য কৃষি পেশা হলেও কৃষিবিদের জন্য সেটা ক্যারিয়ার। তাছাড়া, ক্যারিয়ার মানে শুধু পেশা নয় পেশার অতিরিক্ত ব্যক্তির সহজাত গুণাবলি জীবনের লক্ষ্য এবং উচ্চাকাঙ্খা। মনের মধ্যে ইচ্ছা জাগ্রত না হলে সেদিকে কোন ক্রমেই যাওয়া উচিত নয়। তাই সফলতার জন্য পেশা হিসেবে সঠিক বিষয় নির্বাচন করাটা জরুরি। সফলতার জন্য প্রতিটি সিড়ি খুব সতর্কতা, বিচক্ষণতা ও সাবধানতার সাথে টপকাতে হবে। বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যার অনুপাতে আমাদের সুযোগ সুবিধা খুবই অপ্রতুল। এমন অবস্থায় একটি সুন্দর পেশা নির্বাচন করাটা প্রকৃত অর্থে কিছুটা কষ্টসাধ্য
.
আগামীতে আমরা চেষ্টা করবো সুন্দর ক্যারিয়ারে স্মার্ট কিছু পেশা নিয়ে আলোচনা করার। যা আপনাকে আপনার সফলতার অনেক কাছে নিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here