মেডিকেলে ভর্তির প্রশ্নফাঁসের মূল হোতা গ্রেফতার।

স্টাফ রিপোর্টারঃ সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মূল হোতাকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি কার্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।

সিআইডি জানায়, আবদুস সালাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেসের মেশিনম্যান ছিলেন। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বেশ কয়েকটি ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।

আবদুস সালাম সম্পর্কে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ সুপার এস এম আশরাফুল আলম বলেন, প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে সালাম তাঁর খালাতো ভাই জসিমকে দিতেন। জসিমের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল। তিনি আরও বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন চিকিৎসক ও তিন থেকে চারটি কোচিং সেন্টারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আবদুস সালামকে ২০০৬-২০০৯ সাল পর্যন্ত এক দফা প্রশ্ন ছাপার কাজ থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল আলম বলেন, কীভাবে সালাম আবার প্রেসের কাজ ফিরে পেলেন, সে সম্পর্কে তাঁরা নিশ্চিত নন। এ ব্যাপারে খোঁজখবর চলছে।

সিআইডি সূত্র জানায়, প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত সালামের পরিবারের সাত সদস্য। ২০১৩ সাল থেকে এরা স্বাস্থ্য অধিদফতরের ছাপাখানা থেকে ফাঁস করেছে প্রশ্নপত্র। তারা হাতিয়ে নিয়েছে কয়েকশ কোটি টাকা। পারিবারিক এ সিন্ডিকেটের মাস্টারমাইন্ড ছাপাখানার মেশিনম্যান আবদুস সালাম খান ও তার খালাতো ভাই জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া মুন্নু। সারা দেশের ৩৬টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে অন্তত ১৫টিতে প্রতি বছরই দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে, যারা পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েছিল। চক্রে একই পরিবারের অন্যরা হলো- জসিমের ভাতিজা পারভেজ খান, জসিমের ভগ্নিপতি জাকির হোসেন দীপু, জসিমের ভায়রা সামিউল জাফর, জসিমের স্ত্রী শারমিন শিল্পী ও জসিমের ভাগ্নে রবিন। এদের মধ্যে শুধু জসিমেরই ৪০ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। সালামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার কাশিপুর গ্রামে। তার খালাতো ভাই জসিমের বাড়ি একই উপজেলার বানিয়ারা গ্রামে। অপর মাস্টারমাইন্ড জসিমকে ১৯ জুলাই রাজধানীর শাহআলী থানার এইচ-ব্লকের ১ নম্বর রোডের ৪৩ পৃথ্বী ভিলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। একই এলাকার এ-ব্লকের ১ নম্বর রোডের ২৯ নম্বর বাসা থেকে গ্রেফতার হয় জাকির হাসান দিপু। আর পারভেজ খানকে গ্রেফতার করা হয় মিরপুর-২ এর চ-ব্লকের ৯১/৯২ নম্বর বাড়ি থেকে। এ ঘটনায় পর দিন ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অন্তত ১৫০-২০০ জনের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করে সিআইডি।

২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ওই সময় মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসেরও তথ্য পায় তারা। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় আবদুস সালামসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here