হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার নানা অনিয়ম নিয়ে ঢাকার দুই মেয়রের কড়া নির্দেশনা

নিবন্ধন ব্যতীত কোনো প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যারামেডিকেল ইনস্টিটিউট পরিচালনা করা যাবে না। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও ঢাকা উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালগুলোতে
বিভিন্ন পরীক্ষার যে বিল এটি সম্পূর্ণ একটি ডাকাতির মতন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের এলাকা সমুহে নগরবাসীর জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় সারাদেশে নিরাপদ চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমন্বয় রাখতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় মেয়ররা এসব কথা বলেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের মূল অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে সেটা দেয়া হয়। আজকের কার্যপত্রেই আছে, মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক, ল্যাবরেটরি অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ এ আবেদনের সঙ্গে আবশ্যিক ডকুমেন্টের তালিকায় হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিভিন্ন তথ্যের কথা বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমি অত্যন্ত মর্মাহত, এখানে অবকাঠামো বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। জনবলের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে বলা আছে, কিন্তু সেই হাসপাতাল-ক্লিনিকের বর্জ্যগুলো কীভাবে ব্যবস্থাপনা করবে, তাদের অবকাঠামো কী থাকবে, কী নিশ্চিত করতে হবে- এ বিষয়ে এখানে কিছু বলা হয়নি।’
তাপস বলেন, ‘স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯’ এর ১১২ ধারায় বলা হয়েছে, এ আইন কার্যকর হওয়ার তারিখে বা তৎপর করপোরেশনের এলাকায় করপোরেশনের নিবন্ধন ব্যতীত কোনো প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যারামেডিকেল ইনস্টিটিউট পরিচালনা করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে আমরা এ আইনটি বাস্তবায়ন করতে চাই। এর আগে এখন পর্যন্ত জানা মতে, কোনো বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক আমাদের নিবন্ধন নেয়নি।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতাল যেভাবে মানুষ থেকে ডাকাতির মতন করে—-তারা পয়সা নিচ্ছে। হাসপাতালে ঢোকার আগে পয়সা দিতে হচ্ছে। —জমিজমা বেইচ্যা হাসপাতালের বিল পরিশোধ করছে। ‘অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা করছে বিভিন্ন হাসপাতাল। বিভিন্ন চেকআপের বিল কিন্তু অনেক বেশি।

তিনি বলেন, আপনি একটা চেকআপ করতে দেন- ইউরিন চেকআপ করেন, ব্লাড চেকআপ করেন, কথায় কথায় চেকআপ হচ্ছে ভালো কথা, কিন্তু তাদের যে বিল, তাদের যে হাসপাতালের বিল, তাদের বিভিন্ন পরীক্ষার যে বিল এটি সম্পূর্ণ একটি ডাকাতির মতন কিন্তু, এটি হতে পারে না।’

মেয়র আতিক আরো বলেন, আমি নিজে দেখেছি, আমার কাছে ছবি আছে যে বিভিন্ন ক্লিনিক, হাসপাতালে ট্রিটমেন্ট করার পরে ইউরিন, ব্লাড, স্টুলের স্যাম্পল রাস্তার উপর ফেলে দিয়েছে, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, এটিই হল বাস্তবতা। তাই ক্লিয়ার মেসেজ দেওয়া দরকার, কোনো ধরনের বর্জ্য রাস্তায় তো ফেলার প্রশ্ন ওঠে না — আইনকেও তারা বৃদ্ধাগুলি দেখাচ্ছে।

কবে থেকে নির্দিষ্ট জায়গায় হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোকে যার যার চিকিৎসা বর্জ্য ফেলতে হবে, সেই তারিখ বেঁধে দেওয়া ছাড়া অন্য বিকল্প নেই বলে মত দেন মেয়র আতিক।

এছাড়া ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘সবকিছুই কিন্তু অবৈধ হয়ে যাচ্ছে। গ্যাসের লাইন অবৈধ, ইলেকট্রিক লাইন অবৈধ, বিলবোর্ড অবৈধ, সাইনবোর্ড অবৈধ, রাস্তার মধ্যে যত ধরনের রড, সিমেন্ট, বালি সবই অবৈধ। এটা কিন্তু আর দেওয়া যাবে না মাননীয় মন্ত্রী।
উক্ত সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণও উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here