মাসোহারা না পেয়ে ৭ লক্ষ টাকার ঔষধ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ সিআইসি এর বিরুদ্ধে।

মাসোহারা না পেয়ে অভিযানের নামে ৭ লক্ষ টাকার জীবন রক্ষাকারী ঔষধ পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে কুতুপালং-৭নং ক্যাম্পের ইনচার্জ (সিনিয়র সহকারী সচিব) জেপি দেওয়ান। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সিআইসিসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার কথা জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ ফার্মেসী মালিক হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাঁপালং গ্রামের বাসিন্দা রশিদ আহমদের ছেলে নুরুল হক।
২৫ জানুয়ারি (সোমবার) সকাল ১১টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং টিভি টাওয়ার সংলগ্ন এলাকায় ক্যাম্প-৭-এ ফারজানা ফার্মেসীতে অভিযানের নামে ৭ লক্ষাধিক টাকার ঔষধ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনা ঘটেছে।ক্ষতিগ্রস্থ নুরুল হক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার সহায় সম্বল যা ছিল সর্বস্ব দিয়ে এই ফার্মেসীতে বিনিয়োগ করেছিলাম। আজ ক্যাম্পের কাটাতার সংলগ্ন ফার্মেসীতে আমার অনুপস্থিতিতে এবং বিনা নোটিশে অভিযানের নামে ৭ লক্ষাধিক টাকার ঔষধ আগুনে বিনষ্ট করে দিল ক্যাম্প ইনচার্জ। ওই সময় তার ফার্মেসীতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়। অথচ ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অসংখ্য রোহিঙ্গা ফার্মেসীসহ নানা ব্যবসা বহাল তবিয়তে করছে। আমি ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্টির একজন হিসেবে একটি ফার্মেসী করেছিলাম তাও ক্যাম্পের ভিতরে নয়। আমি এর আইনী প্রতিকার এবং ক্ষতিপুরণ দাবী করছি।
তিনি আরো বলেন, মাসোহারা না পাওয়ার কারণে ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহি: প্রকাশ করে ওই সিআইসি। কারণ ইতোপূর্বে তার নিয়ন্ত্রণে থাকা কমিউনিটি মোবিলাইজার মো: আজিজ, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) সদস্য জসিম, রুবেলসহ আরো একজন নিয়মিত মাসোহারা আদায় করে। সিপিপি সদস্য জসিম তার কাছ থেকে দুই দফায় ১০ হাজার টাকা আদায় করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ক্যাম্প ইনচার্জ জেপি দেওয়ানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাঁর অফিসের আজিজ নামে একজনের সাথে কথা বলতে বলেন। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এরপর আর ফোন রিসিভ করেননি।
সিএম আজিজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত জানতে সিআইসি জেপি দেওয়ানের সাথে কথা বলতে বলেন। তিনি আরো বলেন, সিআইসি স্যার ক্যাম্পে যাওয়ার সময় ফার্মেসীতে থাকা লোকজন পালিয়ে গেলে তাঁর নির্দেশে এসব করা হয়।
অপরদিকে মাসোহারা আদায়কারী অভিযুক্ত সিপিপি সদস্য জসিমের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবী করেন এবং ফার্মেসীর ঔষুধ পুড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে আজিজের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দৌজ্জা বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে সকল ফার্মেসী, ইলেকট্রনিক্স, জুয়েলারি শপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই হয়ত: অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।” তবে ঔষধ জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংসের বিষয়টি তিনি খোঁজ নেবেন বলে জানান।
উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, “শরণার্থী আইনে না থাকা স্বত্ত্বেও ক্যাম্পের অভ্যন্তরে আশ্রিত রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ব্যবসা করে আসছে। অথচ ক্ষতিগ্রস্থ হিসেবে স্থানীয় কয়েকজন যুবক কিছু ব্যবসা করলে তাদের প্রতিহত করা হচ্ছে। অন্য কোন প্রতিষ্টানে অভিযান পরিচালনা না করে শুধুমাত্র তার ফার্মেসীতে অভিযানের নামে ঔষধ পুড়িয়ে দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে তার যে ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here