ডেস্ক রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের লাইসেন্সিং পরীক্ষায় পাশ না করে বা নিবন্ধনহীন অনেক নার্সই বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (বিপিএসসি) অধীনে সিনিয়র ষ্টাফ নার্স (১০ম গ্রেড) নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়াদের একাংশ। রেজিষ্ট্রেশনের তথ্য গোপন করে পরীক্ষা দেওয়ায় নার্স নিয়োগে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে যোগ্যতা না থাকলেও চাকরি পরীক্ষায় পাস করেছেন প্রায় ২ হাজারের অধিক নার্স।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, মেধাক্রম অনুসারে যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দিলে কোন জটিলতা হতো না। যারা যোগ্য তাদের মূল্যায়ন না করে অযোগ্যদের মূল্যায়িত করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) তথ্য গোপন করে (নার্সিং কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত না হয়েও) বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের ফল বাতিল করে পরবর্তী মেধাক্রম অনুসারে যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া প্রসঙ্গে নার্সিং কাউন্সিলের নিবন্ধিত নার্সরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাবর একটি আবেদন করেছেন।
ওই আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়,‘গত বছরের ১ মার্চ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) ‘সিনিয়র স্টাফ নার্স’ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ ছিল যে, ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে প্রার্থীকে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত হতে হবে (প্রমাণ পত্র সংযুক্ত)। কিন্তু আবেদনের সর্বশেষ তারিখ গত বছরের ১৭ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের নিবন্ধিত না হয়েও অনেক পরীক্ষার্থী আবেদন করে এবং প্রথমে প্রিলিমিনারি ও সর্বশেষ চলতি বছরের ২৯ আগস্ট বিপিএসসি’র সরাসরি নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। যা তথ্য গোপন ও আইনের লঙ্ঘনের শামিল।
এতে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের নিবন্ধিত অনেক যোগ্য পরীক্ষার্থী বঞ্চিত হয়েছে। আবেদন চলাকালীন সময়ে যারা নার্সিং কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত ছিল না তাদের সুপারিশ করা ফল বাতিল করে পরে মেধাক্রম অনুযায়ী যোগ্য রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত প্রার্থীদের সুপারিশ করার জন্য জোর আবেদন জানাচ্ছি।’
গত ৩০ আগস্ট নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি)। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৮ হাজার ২৮৮ জন। পিএসসির ওয়েবসাইটে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
পিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের অধীন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের দশম গ্রেডে সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে নিয়োগের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী উল্লেখিত রেজিস্ট্রেশন নম্বরধারী প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
গত বছরের ১ মার্চ আড়াই হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। গত ২৮ জানুয়ারি এ পদের ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান, গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান বিষয়ে মোট ১০০টি প্রশ্ন ছিল।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এমসিকিউর ফল প্রকাশ করে পিএসসি। এতে উত্তীর্ণ হন ১৫ হাজার ২২৮ জন। এরপর উত্তীর্ণ প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। লিখিত পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে পিএসসির ওয়েবসাইটে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ৬ মে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয় যে, সিনিয়র ষ্টাফ নার্স পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রার্থীতা বাতিল বলে গণ্য হবে।
উল্লেখ্য,কিছুদিন পূর্বে জরুরি পরিস্থিতিতে ১৪০১ জন মিডওয়াইফ নিয়োগ করা হয়। সেখানে নিবন্ধন ছাড়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার পর নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রার্থীদের চুড়ান্ত সুপারিশ করা হয়েছিল এবং তারা যোগদান করে কর্মরত আছেন যদিও এ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টে নিয়োগ বঞ্চিত কয়েকজন প্রার্থীর পক্ষে আপিল চলমান আছে।