সুষ্মিতা খান
শিঁড়দাড়া সোজা করে একদম ডানে দাঁড়ানো এই মেয়েটার নাম সানজিদা জাহান। ২৩ বছর বয়স। এখনো বিয়ে করেনি। নার্সিং সাইন্স ও মিডওয়াইফারীতে স্নাতক শেষ করে, প্রশিক্ষন শেষে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কাজ করছে। কিছুদিন কাজ করবে তারপরে নার্সিং এ মাস্টারস করবে সানজিদা। শিশু বিষয়ক বিশেষায়িত সেবিকা হবে সানজিদা।
ছবিটি যেদিন তোলা তার আগের রাতে তিনটায় সানজিদা নিজে দ্বায়িত্ব নিয়ে এক জোড়া জমজ ব্রিচ (উল্টে থাকা) বাচ্চা জন্মাতে সাহায্য করেছে। এপিশিওটমি (যোনীর মুখ কেটে সেলাই দেওয়া) করতে হয়েছে। সেটাও করেছে।
হাসি মুখে খুব দৃঢ়তার সাথে বললো। আমি চোখ কপালে তুলে বললাম বললাম ‘আপনার ভয় করলো না।’ এক গাল হেসে সানজিদা বললো ‘আপা – রাত তিনটায় আমি মাইক দিয়ে ডাকলেও কোনো লাভ নাই। গরীব মানুষ। এমনিতেও দেরী করে আনসে। অনেক রক্ত গেছে। তাড়াতাড়ি করা দরকার ছিলো। উপরে আল্লাহ মেনে নিয়ে কাজ শুরু করসি। সত্যি বলতে ভয় লাগসে আপা, তবে উপায় ছিলো না।‘
কি যে অসম্ভব দৃঢ়তায় বললো এই কথাগুলো। আমি আর Anadil আপা মুগ্ধ হয়ে শুনলাম। তারপরে আনাদিল আপা বললেন ‘এসো তোমার সাথে একটা ছবি তুলি’। আসার আগে মা আর বাচ্চাদের দেখে এলাম। একজন ছেলে শিশু আর একজন মেয়ে শিশু। সবাই ভালো ছিলো, আমাদের স্বাস্থ্যখাত’টা এই সব সানজিদাদের হাত ধরেই পার পেয়ে যায়।
লেখক: সুষ্মিতা খান
রিসার্চ এসোসিয়েট
ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলিনা, ইউএসএ
(লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)