নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ছয় মাসের কম বয়সী শিশু সন্তান নিয়ে কোনো নারী প্রথম সরকারি চাকরিতে যোগ দিলে পূর্ণ বেতনে মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন। সরকারি চাকরিতে কর্মরত নারীরা চাকরি জীবনে দুইবার বেতনসহ মাতৃত্বকালীন ছুটির সুযোগ পান।
সন্তান জন্মের দিন হতে বা জন্মের আগেই মাতৃত্বকালিন ছুটি দেয়া যায়। সন্তান জন্মের পর যদি জয়েনিং হয়, তাহলে সে ছোট্ট বাবুর মাকে মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়ার কোন উপায় থাকতো না। কারন আইনত শিশু জন্মের দিন মায়ের চাকরিটিই ছিল না।
তাহলে উপায়? এই সন্তানটি কি মায়ের চাকরির কারনে বুকের দুধের আজন্ম অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে? ছয় মাসের কম বয়সী একটা বাচ্চা বাসায় কোথায় রেখে মা অফিস করবে! ফলে চোখের পানি এক করে, এর ওর হাতে পায়ে ধরে সদ্য জয়েন করা মা অর্জিত ছুটি নিতেন। শিশুর ছয় মাস হবার বাকি সময়টা নিজের প্রাপ্য ছুটি থেকে কাটাতেন। অথচ মাতৃত্বকালীন ছুটি লাভ করা তার অধিকার ছিল।
বর্তমানে বিভিন্ন অফিস এ ব্যাপারে সদয় ছিল। মায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে সদ্য জয়েন করা মাকে ছুটি দেয়া হত। কিন্ত এটা একটা ‘ফেভার’ করা ধরনের সিদ্ধান্ত ছিল, অধিকার ছিল না। তাই এখানে মায়ের মর্যাদা বিঘ্নিত হত। মা সন্তানের কারনে সীমাবদ্ধ হবে, বা কারও দয়ায় চলবে, এমন হওয়া উচিত না।
মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে সরকারি চাকরি বিধির (১ম খণ্ড) ১৯৭ ধারার উপধারা ১ এ এই বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
সংবিধানের ১৩৩ অনুচ্ছেদের ক্ষমতায় রাষ্ট্রপতি সরকারী কর্ম কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে চাকরি বিধিতে এই সংশোধন এনেছেন।
এর আগে ২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি ১৯৭ ধারার উপধারা-১ সংশোধন করে মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ বেতনসহ চার মাস থেকে ছয় মাসে উন্নীত করা হয়েছিল।
নতুন সংশোধনীতে সন্তানসহ সরকারি চাকরিতে প্রথম যোগ দেওয়া নারীদের জন্যও সেই সুযোগ রাখা হলো।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ছয় মাসের কম বয়সী শিশু নিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়া নারী তার সন্তানের বয়স ছয় মাস হওয়া পর্যন্ত মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটাতে পারবেন।
ধন্যবাদ এই নারী বান্ধব সরকারকে। যার একের পর এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে মায়ের জন্য কর্মপরিবেশ। এখন থেকে জয়েন করা মায়ের যদি ছয় মাসের কম বয়সি শিশু থাকে, তাহলে সে সন্তানের ছয় মাস পূর্তি অবধি তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন।