সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক আলোচিত ও প্রশংসিত একটি অধিদপ্তর হচ্ছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। দুর্নীতি ও অনিয়মের আঁতুরঘর হয়ে উঠেছিল এই অধিদপ্তর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গিকার বাস্তবায়ন ও নার্সিং সেক্টরের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগার নেপথ্যের মূলে প্রধান ভূমিকা রাখছে বর্তমান নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। প্রশাসনিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো থেকে শুরু করে প্রতিটি বিভাগে বীরদর্পে কাজ করে যাচ্ছেন অধিদপ্তরের বর্তমান দায়িত্বশীলরা।
মহাপরিচালক থেকে পরিচালক, উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও নার্সিং কর্মকর্তা সবাই মিলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন এক জনবান্ধব নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। তাই বদলে যাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারি সবার চোখেমুখে উচ্ছ্বাস! এ যেন ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া নতুন এক অধিদপ্তর।
নার্সিং অধিদপ্তরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় হাল ধরেছেন বর্তমান মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার। ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে তিনি যোগদান করেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে। এর আগে তিনি স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তার আগে এই অধিদপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন দক্ষ মহাপরিচালক তন্দ্রা সিকদার ও আলম আরা বেগম। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজাতে তারাও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন।
পরিচালকের তিনটি পদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অনেক দায়িত্ব পালন করছেন জনাব আব্দুল হাই পি.এ.এ।
তিনি এর আগে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ প্রশাসক পুরস্কার (এডমিন এওয়ার্ড) প্রাপ্ত এ কর্মকর্তা যেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের প্রাণ।
নানামুখী ষড়যন্ত্রের কারণে এক সময় নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে বারবার মহাপরিচালক বদলি ও পদায়ন হচ্ছিল। কর্মকর্তাদের অনাস্থার জায়গায় পরিণত হয় এ অধিদপ্তর। এই অবস্থায় ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর অধিদপ্তরের পরিচালক (শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ) পদে যোগদান করেন আবদুল হাই পি.এ.এ।
তিনি কিছুদিন মহাপরিচালকেরও দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি পরিচালক (শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ) এর পাশাপাশি পরিচালক প্রশাসনেরও দায়িত্ব পালন করছেন।
পরিচালক প্রশাসনের মূল দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন আরো একজন কর্মঠ ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্ব জনাব শোভা শাহানাজ। একটি শক্ত প্রশাসনিক কাঠামো তৈরিতে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। তার অনুপস্থিতিতে পরিচালক (শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ) আব্দুল হাই পিএএ পরিচালক (প্রশাসনের) দায়িত্ব পালন করেন।
পরিচালক (অর্থ) এর দায়িত্ব পালন করছেন জনাব শিরিন আখতার। তিনিও অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি দায়িত্বে আসার পর থেকে মাঠ পর্যায়ে অর্থ ব্যবস্থাপনায় কোন অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি।
এই কৃতি প্রশাসকদের হাত ধরেই নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর চলছে দুর্বার গতিতে। বলা যায়, উন্নয়নের মহাসড়কে এখন নার্সিং অধিদপ্তর। এই দক্ষ প্রশাসকদের হাত ধরেই উন্নতি ও অগ্রগতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সময় অতিক্রম করছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর।
এই দক্ষ ও নার্সবান্ধব কর্মকর্তারা প্রশাসনিক দায়িত্ব হাতে নিয়েই শুরু করেন জরাজীর্ণ ও ঘুণে ধরা অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজানোর কাজ। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করে শুরু করেন অভ্যন্তরীণ সংস্কার। প্রায় সকল ক্ষেত্রে শতভাগ সফলও হন তারা। নার্সিং এর উন্নয়নে এই স্বল্প সময়ে তাদের গৃহীত নিন্মোক্ত পদক্ষেপসমূহ নার্সিং পেশার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেই চলছে।
১৯৯০ সাল ও তার পূর্বে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ :
বর্তমান মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার অধিদপ্তরের দায়িত্ব নেয়ার পরই সম্মুখীন হন বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর। অধিদপ্তরের কাজ করতে গিয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার নিজেই কোভিড আক্রান্ত হন। এছাড়া সেবা দিতে গিয়ে গেল এক বছরে সারাদেশে অসংখ্য নার্সিং কর্মকর্তা কোভিড আক্রান্ত হন। মারা যান কয়েকজন। কোভিড আক্রান্ত নার্সিং কর্মকর্তাদের মনোবল বৃদ্ধি ও সুচিকিৎসার জন্য জনাব সিদ্দিকা আক্তার নানা উদ্যোগ নেন। মাঠ পর্যায়ের নার্সিং কর্মকর্তাদের সাথে তিনি নিজে ফোনে যোগাযোগ রাখেন। তার এই আন্তরিকতা ও মমতায় অসুস্থ নার্সিং কর্মকর্তারা মনোবল ফিরে পান। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয় করে দায়িত্বরত নার্সিং কর্মকর্তাদের আবাসন (হোটেল) ও খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা করে দেন তিনি।
এদিকে, দায়িত্ব হাতে নেয়ার পর সিদ্দিকা আক্তারসহ অধিদপ্তরের বর্তমান পরিচালকরা দেখতে পেলেন ১৯৯০ সাল ও তার পূর্বে নিয়োগপ্রাপ্ত অনেক কর্মকর্তার চাকরি এখনো স্থায়ী হয়নি। এদের অনেকেরই অবসরে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে, কিন্তু তাদের চাকরি স্থায়ী হয়নি। তাই প্রথম কাজ হিসেবে তারা হাতে নিলেন চাকরী স্থায়ীকরণের উদ্যোগ। তাদের আন্তরিকতায় দীর্ঘদিন থেকে আটকে থাকা প্রায় পাঁচ শতাধিক নার্সিং কর্মকর্তার চাকরি স্থায়ী হয়েছে।
২০১৩ সালের ৪ হাজার নার্সের এডহক নিয়োগের নিয়মিতকরণের কাজ :
দীর্ঘ সময়ের একটি অমীমাংসিত ইস্যু এডহক নিয়মিতকরণ। ২০১৩ সাল থেকে ৪ হাজার নার্স নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান, কিন্তু তা শেষ হচ্ছিল না। ধাপে ধাপে অল্প অল্প করে যেন কচ্ছপের গতিতে চলছিল এ কাজ। এ দীর্ঘ সময়ে মাত্র ১২০০ নার্সিং কর্মকর্তা নিয়োগ ছাড়া আর কারও নিয়োগ নিয়মতকরণ হয়নি। বর্তমান মহাপরিচালক ও পরিচালকদের আন্তরিকতায় অবশিষ্ট ২৮০০ নার্সিং কর্মকর্তার এডহক নিয়োগ স্থায়ীকরণ হয়েছে। ২০১৬ সালে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে সর্বপ্রথম সিলেট থেকে একজন নার্সিং কর্মকর্তার চাকরি স্থায়ী হয়েছে। বাকিদেরও চাকরি দ্রুত স্থায়ী হওয়ার পথে।
নার্সিং শিক্ষক নিয়োগবিধি :
দীর্ঘদিন থেকে নিয়ম-নীতি ছাড়াই চলছিল নার্সিংয়ের মতো স্বাস্থ্য সেবার গুরুত্বপূর্ণ এ পেশার মূল চালিকা শক্তি নার্স তৈরির প্রধান কারিগর নার্সিং শিক্ষক নিয়োগ। গত ১৪ জুলাই ২০২০ তারিখে শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য নীতিমালা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণয়ন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিভাগীয় প্রার্থীগণের যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন গ্রহণ করা হয় এবং যোগ্যতমদের সরাসরি মন্ত্রণালয়ের ও যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে পরীক্ষা নিয়ে নার্সিং শিক্ষক হিসেবে মনোনয়নের কার্যক্রম প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এখন থেকে নার্সিং ইন্সটিটিউট ও কলেজসমূহে দক্ষতা সম্পন্ন ও অধিক যোগ্য শিক্ষকগণের পদায়ন হবে। অনেক বাধা সত্ত্বে নার্সিং অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার ও পরিচালক (শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ) আবদুল হাই পি.এ.এ এই কঠিন কাজ সম্পন্ন করেছেন। তাদের এই কাজ প্রশংসার দাবি রাখে।
নিয়োগবিধি ও অর্গানোগ্রাম :
২০১৬ সালে নার্স নিয়োগবিধি ও অর্গানোগ্রাম চূড়ান্ত করা হলেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে সাধারণ নার্সিং কর্মকর্তাদের মনে অনেক সন্দেহ ছিল। আশার কথা সাধারণ নার্সিং কর্মকর্তাদের চাহিদার প্রতিফলন বাস্তবায়ন করতে নিয়োগবিধি ও অর্গানোগ্রাম ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। কিছুদিন আগে নিয়োগবিধি ও অর্গানোগ্রাম পাশ হয়ে গেছে। এখন শুধু ঘোষণার পালা। এর ফলে আশা করি নার্সিংয়ে অনেক নতুন পদ পদবী সৃষ্টি এবং পদোন্নতির অনেক সুযোগ থাকবে এ নিয়োগ বিধি ও অর্গানোগ্রামে।
সরকারি নার্সিং কলেজে এমএসসি নার্সিং চালু এবং এমএসসি নার্সিং এর আসন বৃদ্ধি :
দেশে মাত্র একটি সরকারি নার্সিং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমএসসি (নার্সিং) কোর্স চলমান ছিল এবং আসন সংখ্যা ছিল খুবই কম। মাত্র ৬০টি আসনের মারপ্যাঁচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ ব্যাহত হচ্ছিল। গত ২০ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে পৃথক আদেশের মাধ্যমে কলেজ অব নার্সিংয়ে ১০টি বিষয়ে ১৫০ জন নার্সের এমএসসি কোর্স চালুর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার সুযোগ উন্মুক্ত করা হয়। তাছাড়া জাতীয় নার্সিং উচ্চশিক্ষা ও গবেষনা প্রতিষ্ঠানে ৬টি বিষয়ে ১০টি করে আসন বৃদ্ধি করা হয়। যা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব সিদ্দিকা আক্তার ও পরিচালক (শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ) জনাব আবদুল হাই পিএএ এর ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠার ফল। এর মাধ্যমে নার্সদের উচ্চশিক্ষার পথ আরও একধাপ অগ্রসর হলো।
শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব স্বতন্ত্র নার্সিং বিশ্ববিদ্যালয় :
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব স্বতন্ত্র নার্সিং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন দেশের নার্সিং কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। পরিস্থিতির আলোকে বুঝা যাচ্ছে এই দাবি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার ও পরিচালক (শিক্ষা ও প্রশিক্ষন) আব্দুল হাই পি.এ.এ নার্সিং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাদের এ প্রচেষ্ঠা ইনশাল্লাহ আলোর মুখ দেখবে। গত ১৮ ডিসেম্বর কলেজ অব নার্সিংয়ের এক সেমিনারে উপস্থিত হয়ে স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর সকল সরকারি নার্সিং কলেজে এমএসসি নার্সিং কোর্স বাস্তবায়নেরও প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
বদলি নীতিমালা :
অধিদপ্তর তৈরি থেকে সাধারণ নার্সের একটাই সমস্যা বদলি। রাজশাহী থেকে সিলেটে পদায়ন বা বরিশাল থেকে চট্টগ্রাম বা তেতুঁলিয়া থেকে সুনামগঞ্জ বা খুলনা থেকে নেত্রকোনা এমনকি নিজ বাড়ি থেকে এক একজনের ৫০০-৬০০ কিলোমিটার দূরে পদায়ন হতো। এই পেশায় সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ মহিলা হওয়াতে পরিবার ও স্বজন ছেড়ে অনেক দূর দূরান্তে পদায়ন সত্যি বেদনাদায়ক। এই সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ নার্সিং নেতারা বদলি বাণিজ্যে মেতে উঠতেন। তদবিরের জন্য নার্সিং অধিদপ্তরে এসব নেতাদের ভিড় প্রায়ই লেগে থাকতো। মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার ও আব্দুল হাই পিএএ মহোদয়ের প্রচেষ্ঠায় দীর্ঘদিন পর অবশেষ ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে ২৮টি নির্দেশনাসহ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের যুগোপযোগী বদলি নীতিমালা ঘোষণা করা হয়। যা জানুয়ারি ২০২১ থেকে কার্যকর হবে। আশা করি এর সুফল দেশের সকল নার্সিং কর্মকর্তারা পাবেন।
নার্সিং কর্মকর্তাদের বদলি মানে ছিল দুর্নীতির ছড়াছড়ি। কিন্তু সেই অভিযোগ এখন আর নেই। সরাসরি প্রার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রয়োজন ও যৌক্তিক কারণ বিবেচনা সাপেক্ষে হাজারও নার্সিং কর্মকর্তা বদলি হয়েছেন, যেখানে একটি পয়সা খরচ করতে হয়নি। এটা মাঠ পর্যায়ের সকল নার্সিং কর্মকর্তার কাছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। ঢাকায় বসে যেসব দুর্নীতিবাজ নার্সিং কর্মকর্তা বদলি বাণিজ্য করতেন তাদের ব্যাপারেও কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে অধিদপ্তরের বর্তমান দায়িত্বশীলরা। একই সঙ্গে প্রতিটি পদক্ষেপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নার্সিং অধিদপ্তর থেকে সারাদেশের নার্সিং কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে অধিদপ্তরের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বাড়ছে। পাশাপাশি বদলি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত নার্সিং নেতারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।
ডিপিসি তৈরি ও বকেয়া সিলেকশন গ্রেড :
নার্সিং সেক্টরের দীর্ঘদিনের সমস্যা সিলেকশন গ্রেড। মন্ত্রণালয়ে ডিপিসি তৈরি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের অন্যতম সাফল্য। এর মাধ্যমে ১০ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের এক সভায় ২০০৩ সাল পর্যন্ত নিয়োগপ্রাপ্ত ৩ হাজার ১৭৬ কর্মকর্তার সিলেকশন গ্রেড প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে এবং পরবর্তীতে সকল পদোন্নতি ও পদায়নে ডিপিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে আশা করি।
উপরোক্ত পদেক্ষেপ ও নীতিমালাসমূহ অসংখ্য কাজের মধ্যে শুধুমাত্র কয়েকটি জনবান্ধব কাজ যা অনেকদিন আগেই সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও উদাসীনতা ও আন্তরিকতার অভাবে অসম্পূর্ণভাবে ফেলে রাখা হয়েছিল। শুধুমাত্র আন্তরিকতা ও সদিচ্ছার মাধ্যমে বর্তমান নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর জননেত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসা ও আন্তরিকতার ছোঁয়া সারাদেশের সাধারণ নার্সিং কর্মকর্তাদের মধ্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে।
এছাড়াও নন-ক্যাডার পদে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের নিয়োগপ্রাপ্ত নার্সিং কর্মকর্তারা সকল নার্সিং ও নন নার্সিং কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের উদ্যোগ, পিআইএমএস সমস্যার সমাধান, নার্সিং কর্মকর্তা, নার্সিং সুপারভাইজারের জব ডিস্ক্রিপশন খসড়া প্রণয়ন, বিদেশে নার্স প্রেরণ প্রস্তাবনা তৈরি, আইসিইউ নার্স ট্রেনিং আয়োজন, একযোগে ২৪টি সেন্টারে নার্স ও মিডওয়াইফগণের ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং আয়োজন, কারিগরি সমস্যার সমাধান, জেলা পর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তি সহায়তার জন্য নার্সিং কর্মকর্তা পদায়নসহ বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কার্যক্রমের মাধ্যমে এগিয়ে চলছে নার্সিং অধিদপ্তর। আমাদের উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে এমন একটা দক্ষ প্রশাসন আমরা সব সময় প্রত্যাশা করি। সৎ দক্ষ ও যোগ্য এমন প্রশাসক দেশের প্রতিটি দপ্তর ও অধিদপ্তরে প্রয়োজন। এভাবেই এগিয়ে যাবে আমাদের প্রিয় নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। এগিয়ে যাবে দেশ।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
লেখক
সাধারণ সম্পাদক,
বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন,
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখা।