BD Logo

৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ইং তারিখে জারি করা হয়েছে ‘সরকারি কর্মচারী লিয়েন বিধিমালা। এর ফলে বৈদেশিক চাকরিতে নিয়োগ বিষয়ে ১৩ বছর আগে জারি করা নিয়োগনীতির অবসান হয়। সরকারি কর্মচারী আইন-২০১৮ এর ধারা ৫৯(১) বলে এই বিধিমালা জারি করা হয়েছে। এ বিধিমালায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে লিয়েনে অন্যত্র চাকরি নিলেও সরকারি চাকরি চলে যাবে না।

কর্মচারির বর্তমান পদমর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পদে একজন কর্মচারী সর্বোচ্চ ৫ বছরের জন্য লিয়েন ছুটি পাবেন। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে অনুমতি সাপেক্ষে তা ২ বছর বাড়িয়ে ৭ বছরে উন্নীত করা যাবে। লিয়েন আবেদন আন্তরিকতার সঙ্গে বিবেচনা করবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়। তবে এটিকে কেউ অধিকার হিসাবে বিবেচনা করতে পারবেন না।

চব্বিশ পৃষ্ঠার বিধিমালাটি জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা। এর উল্লেখযোগ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে- বৈদেশিক চাকরি বা বেসরকারি চাকরির প্রার্থিতা নিয়ন্ত্রণ এবং এ সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি অথনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পাদন করবে।

এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সুপারিশ প্রদান ও বাস্তবায়ন করবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনসমূহ এ ধরনের চাকরির শূন্যপদ, সুযোগ কিংবা তথ্য সংগ্রহ করে প্রথমত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে জানাবে। ক্ষেত্রমতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে অবহিত করবে।

এসব শূন্যপদের বিপরীতে কিংবা অন্যভাবে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আগ্রহী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বৈদেশিক বা বেসরকারি চাকরির (লিয়েন) জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিদেশে কোনো রাষ্ট্রীয় বা সুপ্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বা সংস্থায়, দেশে বা বিদেশে অবস্থিত জাতিসংঘ ও বহুজাতিক সংস্থা অথবা এরূপ সংস্থা কর্তৃক সরাসরি বাস্তবায়িত প্রকল্পসমূহে চাকরির জন্য সরকারের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

একইভাবে এমন সুযোগ রাখা হয়েছে বিদেশি অথবা বিদেশি সাহায্যপুষ্ট বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), সরকারের অংশীদার বা মালিকানাধীন লিমিটেড কোম্পানি, সরকারের আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে এরূপ প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে কোনো মন্ত্রণালয় বা সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়িত বা পরিচালিত কোনো প্রকল্প বা কর্মসূচির পদের জন্য। তবে চাকরি নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে আবেদনের বিষয়টি অবহিত করতে হবে।

কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি সরকারি চাকরি সংরক্ষণ করতে না চান কিংবা লিয়েন প্রাপ্যতা সৃষ্টি হওয়ার আগেই লিয়েনে যেতে চান, তবে তাকে চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে সরকারি কোনো ছাড়পত্র নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

২৪ দফার অন্যতম শর্ত হচ্ছে- সমগ্র চাকরি জীবনে একজন কর্মকর্তা-কর্মচারী বিচ্ছিন্ন কিংবা ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত লিয়েন ছুটি ভোগ করতে পারবেন। কিন্তু এ সময়ে তিনি সরকারি চাকরি থেকে কোনো বেতন, ভাতা বা ছুটি পাবেন না। এ সময়কালে শুধু চাকরির জ্যেষ্ঠতা, বেতন বৃদ্ধি ও অবসর গ্রহণের জন্য বিষয়গুলো যথারীতি বহাল থাকবে।

তবে ছুটি মঞ্জুর না হওয়া পর্যন্ত কেউ অফিসে অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না। কোনো অবস্থাতে ভূতাপেক্ষ লিয়েন মঞ্জুর হবে না। লিয়েন ছুটি পেতে হলে চাকরি স্থায়ী হওয়াসহ চাকরিকাল কমপক্ষে ৫ বছর পূর্ণ হতে হবে। কারও বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন বা চলমান থাকলে অথবা ফৌজদারি মামলা দায়ের হলে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি লিয়েনের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

লিয়েনের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৪ সপ্তাহ আগে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটালে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লিয়েনে কর্মরত থাকাবস্থায় শারীরিক অথবা মানসিক বৈকল্য বা অক্ষমতা দৃশ্যমান হলে তার দায়দায়িত্ব সরকার নেবে না।

তবে লিয়েনে থাকাবস্থায় কেউ মৃত্যুবরণ করলে নিয়মানুযায়ী পেনশন প্রদানসহ প্রাপ্য সব সুবিধাদি তার পরিবারকে দেওয়া হবে।

লিয়েন আবেদন ও সংশ্লিষ্ঠ প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজাদি দেখতে ক্লিক করুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here