মেডিকেল এডুকেশন -একটি ভাবনা

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরীর কলাম 
মেডিক্যাল এডুকেশন থাকা উচিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। তাহলে শিক্ষায় আসত বহুমাত্রিকতা,বহু স্বজাতীয় বা সম্পর্কযুক্ত বিষয়ের (allied subjects) ঘটতো সম্মিলন যেমন-ক্লাইমেট হেলথ,পরিবেশ বিজ্ঞান,হেলথ ইকোনমিক্স,এপিডেমিওলজি, এন্ত্রপলজি,এডুকেশন সায়েন্স,সমাজ বিজ্ঞান,মনোবিজ্ঞান। আর তখন গবেষণার কদর বাড়ত আর গুরুত্ব পেত। এছাড়া আমাদের দেশের হেলথ ফোকাস কি? নিরাময়ি না প্রতিরোধক? করোনা আসার পর নিশ্চয়ই নীতি নির্ধারকরা নতুন ভাবে স্বাস্থ্য সেবা আর শিক্ষা সম্বন্ধে ভাববেন।
আমরা অনেক পুরানো গত শতাব্দীর চিকিৎসা শিক্ষা অনুসরন করছি এখনো। আর এতদিনে কারিকুলামে তেমন উল্লেখ যোগ্য পরিবর্তন ঘটেনি। ইতিমধ্যে সারা পৃথিবীতে বদলে গেছে আমরা বদলাতে পারিনি। পৃথিবী এগিয়ে গেলেও আমরা স্থবির থাকায় পিছিয়ে গেছি। এজন্য যে মালয়েশিয়ার ছাত্র পড়তে আসত তারা এখন স্বাস্থ্য সেবার রোল মডেল। ভূটান,নেপাল আমাদের থেকে খুব পিছিয়ে নেই।
আমাদের প্রাচীন কারিকুলাম আর স্বাস্থ্য শিক্ষার মান অবনতির জন্য আমাদের ডাক্তারদের একাত্তরে উন্নত দেশে যে রকম অভ্যর্থনা ছিল এখন তা একেবারেই অনুপস্থিত। এতে জ্ঞান বিজ্ঞান গবেষণা আর প্রযুক্তি বিনিময় আর যাকে আমরা টেকনোলজি ট্রান্সফার বলি তা ব্যহত হচ্ছে আর এতে আমাদের আপডেটিং হচ্ছেনা যেসব অগ্রগতি হচ্ছে তা আমরা হাতে কলমে শিখে প্রয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছিনা। ধারাবাহিক ভাবে এরকম অবহেলা আর ভ্রান্ত নীতির জন্য এমন হল ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা থাকলে স্বাস্থ্য শিক্ষার আধুনিকীকরণ হবেনা বলে মনে হয়। কারিকুলামে আসবেনা কাঙ্খিত পরিবর্তন।
শিক্ষকতা,গবেষণা জনস্বাস্থ্য এসব বিষয় আকর্ষণীয় না করলে যাদের দেয়া হবে তারা তদবির করে হাসপাতালে পোস্টিং নিয়ে রোগী চিকিতসার দিকে চলে আসবে। বাক্য ব্যয় আর লেখা লেখি সার হবে কাজের কাজ হবে না। আমাদের দেশে অচলায়তন বেশি,ডিগ্রির কদর বেশি,যোগ্যতা আর অভিজ্ঞতা আর জ্ঞানীর কদর কম ।আর বৃদ্ধ হলে এরা বাতিল হয়ে যায়। বয়স ৫০ এর বেশি হলে কোর্টে সাক্ষী দিতে পারবেনা এমন ঔপনিবেশিক আর ব্রিটিশ ভাবধারায় এখন ও অনেকে প্রভাবিত। উন্নত দেশে গেলে দেখবেন বৃদ্ধ অতি বৃদ্ধ অধ্যাপক যারা ইচ্ছুক তাদের সমাদর করে ডিপার্ট মেনটে বসিয়ে রাখে যেমন বাসায় বৃদ্ধ বাবা থাকলে সংসার ঠিক মত চলে। এদেশে বুড়া তাড়াতে পারলে বাচে বলে অনেক করেছেন এবার বাসায় ঘুমান। বিদেশে এতে কার ও চাকুরীতে প্রমোশনের অসুবিধা হয়না। বৃদ্ধের অবস্থান আলাদা।

লেখক
সাবেক ডীন
চিকিৎসা অনুষদ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
সাবেক অধ্যক্ষ,চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here