ইউরোপে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনার সংক্রমণ আবার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে৷ বেলজিয়ামসহ বিভিন্ন দেশ জানিয়েছে, ব্যয় সংকোচন করতে সংক্রমিত রোগীর সংস্পর্শে এলেও কারো আর করোনা টেস্ট করানো হবে না৷ করোনা পরীক্ষা ও ট্র্যাক করা নিয়ে পুরো ইউরোপই অনেকটা দিশেহারা৷
এরই মধ্যে ফিনল্যান্ডের বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার জন্য নিয়েছে এক ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ। ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কির বিমানবন্দরে ছোট্ট একটা কেবিনে অল্প একটু খাবারের বিনিময়ে মাত্র কয়েক সেকেন্ডে করোনা পরীক্ষা করছে কুকুর ‘কোসি’৷ কেসির প্রদান করা প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে ল্যাব টেস্ট করা হচ্ছে এবং আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন দেয়া হচ্ছে।
পরিক্ষার পদ্ধতিটাও একদম ব্যাতিক্রম! নাক থেকে কোনো স্পেসিমান বা সোয়াব নেয়ার দরকার নেই৷ ব্যক্তির হাত বা ঘাড় মোছা কাপড় শুঁকে তৎক্ষণাৎ কুকুর জানিয়ে দেবে করোনার সংক্রমণের কথা৷ শুধু তাই নয় করোনা সংক্রমণের শিকার ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন, কিন্তু পাঁচদিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায়নি এমন ব্যক্তিরও করোনায় সংক্রমণ ধরা পড়েছে কুকুরের পরীক্ষায় এবং তাকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে৷
কিভাবে এই অদ্ভুত পদ্ধতির পরিক্ষা ব্যাবস্থা শুরু হলো জানতে গিয়ে জানা যায়, হেলসিঙ্কি ভেটারনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক কুকুরকে রোগ নির্ণয়ের কাজে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়৷ প্রথম পর্যায়ে ১৫টি কুকুরকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে৷ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এ দলের মধ্যে এমন কুকুর আছে, যারা শরীর শুঁকে বলে দিতে পারে কারো ডায়াবেটিস আছে কিনা৷ অর্থাৎ তারা এ বিষয়ে আগে থেকেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিল। শুধু তাই নয়, বেডবাগস, ক্যান্সারের মতো রোগ নির্ণয়ে তাদের প্রশিক্ষণ রয়েছে৷ প্রথমে প্রশিক্ষণের পর কুকুর‘কোসি’র সাত মিনিট সময় লেগেছে প্রশিক্ষক আসলে কী চাইছেন তা বুঝতে৷
হেলসিঙ্কি ভেটারনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আনা হিলেম জানান, এই কুকুরগুলো করোনার হাত থেকে অনেক জীবন রক্ষা করতে পারে৷ তিনি জানালেন, কুকুর পরীক্ষার পর তারা অন্য মাধ্যমে পরীক্ষা করেও পরীক্ষাগুলো শতভাগ সঠিক ছিল৷
কিন্তু এই পদ্ধতির পরিক্ষা করার জন্য এখনো পর্যন্ত ফিনল্যান্ড সরকারের পক্ষ হতে সরকারি কোন অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় নাই। যদিও স্থানীয় মেয়র আর্থিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন এবং জনগন এ পদ্ধতিতে পরিক্ষা করাতে ব্যাপক আগ্রহী।
(ইন্টার্নেট থেকে সংগ্রহিত)