ডেস্ক রিপোর্টঃ সবার আগে মহাকাশ বিজয়ের মত কোভিড -১৯ মহামারীতে রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিন আবিষ্কারকে রাজনৈতিক ক্ষমতা আর বাজার দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকার সাথে তুলনা করেছেন বিশেষজ্ঞগণ। ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন সকল প্রকার পরীক্ষা শেষ করেই ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
নিউজ এজেন্সি এ এফ পি সহ মার্কিন সংবাদপত্রগুলোর একাংশের অভিযোগ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হবার আগেই ভ্যাকসিনটির ছাড়পত্র দিয়েছে রাশিয়া। তাদের দাবি পুরোটাই রাজনৈতিক ক্ষমতা আর বাজার দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকাই মূল উদ্দেশ্য রাশিয়ার।
আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্টেলিয়া ও কানাডায় তিনটি ধাপে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এর মধ্যে চীনের তিনটি সংস্থা সহ মার্কিন সংস্থা মর্ডানা তাদের ৩য় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলানোর কথা জানিয়েছিল।
রিসার্চ ইন্সটিটিউটগুলোর তথ্য অনুযায়ী যে কোন ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগের ছাড়পত্র পাবার আগে তিনটি (কারো কারো মতে চারটি) পর্যায়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলে। সবথেকে দীর্ঘ ও গুরুত্ব বহন করে ৩য় পর্যায়ের ট্রায়াল। এই পর্যায়ে ভ্যাকসিনের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা হয়। তাই ৩য় পর্বের ট্রায়াল শেষ হতেই কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। ৩য় পর্যায়ের ট্রায়াল দিতে ৩০০-৩০০০ জন মানুষের উপর টিকা প্রয়োগ করে কার্যকারিতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নজরে বাখা হয়। টিকা কতটা নিরাপদ, কার্যকর এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কেমন তা দেখা হয় ৩য় পর্যায়েই।
বিশেষজ্ঞের মতে স্পুটনিক-ভি কতদিনের জন্য ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার এন্টিবডি তৈরি করে তাও দেখতে হবে। রাশিয়ার এই টিকার ক্ষেত্রে এসবই অজানা। টিকা কতদিন সুরক্ষা দিবে এবং তার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কি না তার কিছুই স্পষ্ট নয়।
ভাইরোলজিস্টের মতে এই ভাইরাসটির নানা রকমের স্ট্রেন আছে। যদি রাশিয়ার মত অন্য দেশগুলো স্থানীয়ভাবে কোভিড-১৯ ভাইরাসের বিভিন্ন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারে তাহলে এই মহামারী সহজেই মোকাবেলা করা যাবে।
এতসব সমালোচনার মধ্যেও প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন তার দেশই প্রথম করোনা ভাইরাসের টিকা তৈরি করেছে এবং স্পুটনিক-ভি দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ সক্ষমতা দেখাতে সক্ষম হবে।