শ্রীলংকা এবং মালদ্বীপঃ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম হাম ও রুবেলা মুক্ত দেশ

শ্রীলংকা এবং মালদ্বীপ কে হাম ও রুবেলা মুক্ত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ঘাতক এই রোগ দুটি থেকে শিশুদের মুক্ত রাখা সুস্থ্য মানবজাতি এবং সবার জন্য স্বাস্থ্য অর্জন প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডাঃ পুনম খেত্রফল সিং। তিনি দেশ দুটিকে এই অর্জনের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সদস্য দেশগুলো গত বছরের সেপ্টেম্বরে হাম ও রুবেলা নির্মূলের লক্ষ্য হিসেবে ২০২৩ সাল নির্ধারণ করেছিল। সংস্থার ফ্লাগশিপ প্রোগ্রামের লক্ষ্যটিকে সংশোধন করে ২০১৪ সাল থেকে হাম দূরীকরণ এবং রুবেলা নিয়ন্ত্রনের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি। নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশ দুটি এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করল। কার্যকরীভাবে হাম এবং রুবেলা নির্মূলের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক যাচাই কমিশনের ৫ম বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেয়া হয়। কমিশনটি ইপিডেমিওলজি, ভাইরোলজি এবং জনস্বাস্থ্যের ১১ জন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত।
কোন দেশে যখন ৩ বছরের অধিক সময়জুড়ে ভাল একটি সার্ভিলেন্স সিস্টেমের আওতায় থেকে হাম এবং রুবেলা ভাইরাসের স্থানীয় সংক্রমণের কোনও প্রমান পাওয়া যায় না তখন সেই দেশকে হাম ও রুবেলা মুক্ত দেশ বলে ঘোষণা দেয়া হয়। মালদ্বীপে ২০০৯ সালে হাম ও ২০১৫ সালে রুবেলা এবং শ্রীলংকায় মে/২০১৬ সালে হাম ও মার্চ/২০১৭ সালে রুবেলার স্থানীয় সংক্রমণটি রেকর্ড করা হয়।
গোটা পৃথিবী যখন করোনা মহামারীতে পর্যুদস্ত তখন এই অর্জন সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে বলে মনে করেন ডাঃ পুনম খেত্রফল সিং। তিনি করোনা মহামারী মোকাবেলা করে শিশুদের জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালু রাখার জন্য সদস্য দেশগুলোর ভূয়সী প্রসংশা করেন। মহামারীর কারণে কিছু দেশে ইপিআই কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর বর্তমানে তা পুনরায় চালু করার চলমান প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই অঞ্চলের দেশগুলো তাদের রুটিন টিকাদান কর্মসূচীতে হামের ভ্যাকসিনের দুইটি ডোজ এবং রুবেলা ভ্যাকসিনের কমপক্ষে একটি ডোজ চালু করেছে। হামের প্রথম ডোজের কাভারেজ ৮৮% ও ২য় ডোজের কাভারেজ ৭৬%। ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ৫০ কোটি শিশুদের হাম ও রুবেলা ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে এবং ২০২৩ সালের মধ্যে এই অঞ্চল থেকে হাম ও রুবেলা নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সার্ভিলেন্স কার্যক্রম, কৌশলগত দিকনির্দেশনা ও নীতিমালা পরিমার্জন করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডাঃ পুনম খেত্রফল সিং।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here