কোভিড -১৯ এর কার্যকরি একটি ভ্যাকসিনের জন্য বিশ্বব্যাপী দৌড় চলছে। তাড়াহুড়ো করে রাশিয়া, চীন ভ্যাকসিন তৈরির ঘোষনা দিলেও তা সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যাসংবলিত ছিল না। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় নামার আগেই সমালোচনার মাধ্যমে জাদুঘর প্রেরণ করে দিয়েছিল বিজ্ঞান জার্নালসমূহ। বাজারে আসার ঘোষনার পরেও ভ্যাকসিন দুইটা বাজারে না ছেড়ে মানোন্নয়নের ল্যাবে চলে গেছে আবার।
তবে এবার আশার আলো দেখিয়েছেন একটি তুর্কি অভিবাসী দম্পতি, তারা সম্ভাব্য ইনোকুলেশনের পিছনে একটি স্বপ্নের দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এখন পর্যন্ত সকল আবিষ্কারের মধ্যে কভিড-১৯ এর প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি কার্যকরি স্বপ্ন দেখিয়েছে তাদের আবিষ্কার।
৫৫ বছর বয়সী ডাঃ উগুর শাহিন জার্মান বায়োটেক ফার্ম বায়োএনটেকের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং তাঁর স্ত্রী ওজলেম তুয়েরেকি (৫৩) এই ফার্মের চিফ মেডিকেল অফিসার। বলতে গেলে স্বামী স্ত্রী এর প্রতিষ্ঠান।
এই দম্পতি ক্যান্সার ইমিউনোথেরাপি চালানোর লক্ষ্যে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গুনগত মানে বিশ্বের সেরা মানের ইমিউনলজি গবেষনাগার বা গবেষনা ফার্ম। বিশ্বখ্যাত বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন তাদের ফার্মে কয়েক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন।
৯ নভেম্বর, (সোমবার) ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট ফাইজার ঘোষণা করেছিলেন যে তারা বায়োএনটেকের সাহায্যে যে ভ্যাকসিন তৈরি করছেন তা ৯০ শতাংশ কার্যকর। এবং তার সফলতার বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা ও দিয়েছিলেন।
এটি এমন এক ঘোষণা যা বিশ্বব্যাপী উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, যেখানে শুধু যুক্তরাজ্যে বা জার্মানি নয় এটির প্রকৃত চাহিদা আসছে বিশ্বব্যাপী। ইতিমধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সরকার তার দেশে এই ভ্যাকসিনের পর্যাপ্ত সরবরাহ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
জানুয়ারী-২০১৯, যখন কোভিড -১৯ এর প্রাদুর্ভাব প্রথম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, ডাঃ শাহিন প্রায় ৫০০ জনকে নিয়ে ডেডিকেটেড ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন। মার্চের মধ্যে, তাদের কাজটি ফার্মাক জায়ান্ট ফাইজার এবং চীনা ওষুধ প্রস্তুতকারী ফোসুনের সমর্থন পেয়েছিল।
ডাঃ শাহিনের গবেষনা ল্যাবের মূল্য এখন প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। তবুও তিনি কাজ করার জন্য একটি বাইকে চড়েছেন বলে জানা গেছে। তুরস্কে জন্মগ্রহণ করলেও ছোটবেলায় ভাগ্যের সন্ধানে বাবা মা এর সাথে জার্মানিতে পাড়ি জমান। এরপরে জার্মানিতে বেড়ে উঠা।
ডা. শাহিন এখনো ছুটে চলেন যেখানে তার বাবা-মা কাজ করেছিলেন।
ডাঃ শাহিন যখন একজন ইমিউনোলজিস্ট হিসেবে কোলনে কর্মরত ছিলেন সেখানে আরেক তুর্কী বংশোদ্ভূত ডা. ওয়াইজলেম তুয়েরির সঙ্গে দেখা হয়। সেখানেই প্রেম ও প্রেম পরিণয়ে রুপ লাভ করে।
এ দম্পতির তৈরি ভাকসিন কভিড-১৯ এর প্রতিষেধক হিসেবে এ যাবৎ বিশ্বের সবচেয়ে নিখুত ও নীরিক্ষার প্রতিটি ধাপে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রাথমিকভাবে ৯০% সফলতা প্রমান করেছে।
মূল: ম্যাইনেক এগারওয়াল
ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউ কে।
বঙ্গানুবাদ (আংশিক সম্পাদিত) :বিডিহেলথ এক্সপ্রেস ডেস্ক