সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে বখাটের ছুরিকাঘাতে এক জ্যেষ্ঠ নার্স আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। আহত নার্সের নাম শ্রাবন্তী কোচ (২২)। এ ঘটনায় জড়িত মিজানুর রহমান নামের এক যুবককে গ্রেপ্তারের দাবিতে হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করেছেন নার্সিং কর্মকর্তাগণ।
সূত্র জানায়, গতকাল রাতে হাসপাতালের নতুন ভবনের ষষ্ঠ তলায় অন্যদের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছিলেন জ্যেষ্ঠ নার্স শ্রাবন্তী কোচ। রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী হাসননগর এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান (১৮) সেখানে যান। এ সময় তিনি পারভিন নামের একজন আয়াকে খুঁজছিলেন। এ সময় পারভিনকে খোঁজার কারণ জানতে চাইলে মিজান ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং শ্রাবন্তী কোচের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে মিজান তাঁর প্যান্টের পকেট থেকে ছুরি বের করে ওই জ্যেষ্ঠ নার্সের গলায় আঘাত করার চেষ্টা করেন। ওই নার্স হাত তুলে ফেরাতে গেলে ছুরির আঘাত তাঁর বাঁ হাতে লাগে। পরে অন্য নার্সরা ও সেখানে থাকা লোকজন এগিয়ে এলে মিজান পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করেছেন হাসপাতালের নার্সিং কর্মকর্তাগণ।
আহত শ্রাবন্তী কোচ রাতেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনার প্রতিবাদে রাতেই কিছু সময় কর্মবিরতি পালন করেন নার্সরা। হাসপাতালের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত হয়েছে। খবর পেয়ে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শামস উদ্দিন ও হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম সেখানে যান এবং ঘটনায় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সহিদুর রহমান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তাঁরা রাতেই হাসপাতালে গিয়ে ওই নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএমও মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত ওই যুবক মাদকাসক্ত বলে তাঁরা জেনেছেন। এ ঘটনায় হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ে সকালে বৈঠক করেছেন সিভিল সার্জন। হাসপাতালের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ঘটনায় সারা দেশে নার্সদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ প্রাপ্তির দাবি দীর্ঘদিন থেকে করে আসছেন নার্সিং অফিসারগণ। বিগত কিছুদিনের ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা যায় হাসপাতালগুলোতে বখাটের অত্যাচারে ডাক্তার নার্স সহ স্বাস্থ্যসেবা দানকারীগণ নানা ভাবে হেনস্থা হচ্ছেন। অবিলম্বে বখাটে মাদকাসক্তদের হাসপাতালে অবাধ প্রবেশ বন্ধ করা না গেলে চিকিৎসা সেবায় এর প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন নার্সিং অফিসার সহ নানা স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীগণ।