মোহনপুর হাসপাতালে ডিউটিরত নার্সকে হত্যার চেষ্টাঃ হামলাকারি শনাক্ত

রাজশাহীর মোহনপুরে নার্সকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করার পর তরুণ পালিয়ে যাচ্ছে- ছবি : সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে শিলা প্রামাণিক নামের এক সিনিয়র স্টাফ নার্সকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে এক যুবক। ২০১৬ ব্যাচের এই নার্সিং কর্মকর্তা প্রায় ছয় বছর থেকে উক্ত হাসপাতালে কর্মরত আছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত নার্স শিলাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। আহত শিলার বাড়ি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার সাবাইহাট। স্বামীর নাম বিধান পণ্ডিত।

নার্স শিলা প্রামাণিক

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. আরিফুল কবির জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালে দায়িত্বরত অবস্থায় শিলার ওপর হামলা হয়।

হাসপাতালের ওয়ার্ড ইনচার্জ মোঃ মার্শাল হোসেন জানান, নার্স শিলা কম্পিউটারে কাজ করছিলেন। এ সময় পেছন থেকে এক যুবক তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। তার মাথায় ৬টি সেলাই দিতে হয়েছে। একপর্যায়ে গলাটিপে হত্যারও চেষ্টা করে সেই যুবক। শিলার গলায় আঙ্গুলের দাগও রয়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।

এ ঘটনায় এক তরুণকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করেছে পুলিশ। ওই তরুণের নাম মো. মেহেদী (২১)। তিনি মোহনপুর উপজেলার সইপাড়া গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। সিসিটিভি ফুটেজে হামলার পর তাঁকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে আসামি করে মামলা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।

মেহেদী হাসানের পরিবারের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তাঁর বাবা রিয়াজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে নেশা করেন। তাঁর মাথা ঠিক নেই। তাঁর ছেলে মাঝেমধ্যেই এমন করেন।

ফাইল ফটো

রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ওখানে যিনি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন, তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যও আসেননি। একেবারে হাসপাতালের বাইরের একজন মানুষ। যেভাবে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারত। ওই নার্সকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর মাথায় আঘাত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বলেছেন।

ইতিপুর্বেও হামলাকারি যুবকের বাবা রিয়াজ উদ্দীন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ আলি আকবরকে মারধর করেন এবং সে ঘটনার বিচার না হওয়ায় বুক ফুলিয়ে উপজেলায় বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়ান। পুর্বের ঘটনায় বিচার না হওয়ায় পুনরায় তারই ছেলে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা যায়।

সরকারি হাসপাতালের প্রাচীরের উপর কাটাতারের বেড়া কেটে ফেলে গোপন রাস্তা বানিয়েছে এলাকাবাসি এবং সে রাস্তা দিয়েই সন্ত্রাসীরা এসব অপকর্ম করে বলে সুত্র জানায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here