গুজরাটে উপসনালয়গুলোতে প্রার্থনার পাশাপাশি চলছে কোভিড সেন্টার

“মানুষের প্রাণ বাঁচানোর থেকে বড় কোনও ইবাদত হতে পারে না” বলেন জাহাঙ্গীরপুরার মসজিদের সঞ্চালক। ভারতজুড়ে মরণ ভাইরাসের দাপটে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রেকর্ড হারে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। হাসপাতালে মিলছে না শয্যা, রয়েছে অক্সিজেনেরও আকাল। মহারাষ্ট্র আর গুজরাত সমেত দেশটির অনেক রাজ্যের অবস্থাই গুরুগম্ভীর। আর এই পরিস্থিতেই দেবদূতের মত মানুষের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন দেশটির মানুষ। ধর্মের মেরুকরণে রাজনীতি হলেও কোভিড যুদ্ধে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে লড়ছেন বিভিন্ন ধর্মের মানুষ। লক্ষ্য একটাই, আক্রান্তের পাশে দাঁড়ানো। তাঁদের সহায় হয়ে এই যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করা। কোথাও মন্দির, কোথাও গুরুদ্বার তো কোথাও মসজিদ, দেশের দুর্দিনে এক অন্য যুদ্ধের সৈনিক আজ ধর্মপ্রতিষ্ঠগুলিও।

গুজরাতে প্রতিদিন সাত হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে হাসপাতালেও করোনা রোগীদের জন্য বেড কম পড়ছে। আর এই কঠিন সময়েই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ধার্মিক স্থানগুলো। হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য বেড কম পড়ায় বডোদরায় জাহাঙ্গীরপুরার একটি মসজিদকে কোভিড সেন্টারে রূপান্তরিত করা হয়েছে।

হাসপাতালে বেড কম থাকার খবর শুনেই এই সিদ্ধান্ত নেন জাহাঙ্গীরপুরার মসজিদের সঞ্চালক। তিনি বলেন, “মানুষের প্রাণ বাঁচানোর থেকে বড় কোনও ইবাদত হতে পারে না।” সঞ্চালক ইরফান শেখ বলেন, “এটি চরম সঙ্কটের সময়, এই সময়ে সবার এগিয়ে আসা দরকার।

তিনি বলেন, এই মসজিদে নামাজ পড়া হচ্ছে ঠিকই পাশাপাশি হাসপাতালে বেডের অভাব থাকার কারণে আমরা মসজিদকে কোভিড সেন্টার হিসেবে সহযোগীতার সিদ্ধান্ত নিই। আপাতত এখানে ৫০টি বেড আর অক্সিজেনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।”

শুধু মসজিদই নয়। গুজরাটের বদোদরায় স্বামীনারায়ণ মন্দিরেও কোভিড রোগীদের জন্য ৫০০ বেডের ব্যবস্থা করেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার- ১৩ এপ্রিল থেকে কোভিড -১৯ রোগীদের জন্য ৫০০টি বেড এবং অক্সিজেন সুবিধা সহ মন্দিরে অস্থায়ী কোভিড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ আতঙ্ক বাড়াচ্ছে দেশটিতে। লকডাউনের ১৩ দিন পেরিয়ে মঙ্গলবারও আড়াই লক্ষের বেশি সংক্রমিত হয়েছেন দেশটিতে। করোনা রোগীর সংখ্যা ২০ লক্ষ । নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে ২ লক্ষ ৫৯ হাজার জন। গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনা প্রাণ নিয়েছে ১৭৬১ জনের। এই নিয়ে ভারতে মোট মৃত্যু হল ১ লক্ষ ৮০ হাজার ৫৩০ জনের। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মহারাষ্ট্রে। শেষ চব্বিশ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে আক্রান্ত হয়েছে ৫৮ হাজর ৯২০ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৫১ জনের। উত্তর প্রদেশেও নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ২১০ জন। দিল্লিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ হাজার ৬৯০। দেশটির রাজধানীতে শেষ চব্বিশ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৪০ জনের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here